1. info@www.globalnewsbangla.info : Global News Bangla :
শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:০৪ অপরাহ্ন

শেষ হলো ‘‘সুতানাল দিঘিতে’’ রোমাঞ্চকর মৎস শিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১৩৪ বার পড়া হয়েছে

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ঐতিহাসিক সুতানাল দীঘিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দুই দিনব্যাপী বর্শি দিয়ে মৎস শিকার উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়ে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শেষ হয় এই মাছ ধরার উৎসব৷
এতে দেশের বিভিন্ন জেলার সৌখিন মৎস শিকারীদের অংশগ্রহনে এক মিলন মেলায় পরিনত হয় শালমারা গ্রা‌মের সুতানাল দিঘি পাড়।

এই উৎসবের আয়োজক শালমারা সুতানাল ভূমিহীন সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, এবার প্রতি টিকিট ২০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে। এতে ৬৭ টি টিকিটে ১৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। যদিও এই দিঘি খননের সঠিক কোন ইতিহাস আজো জানা যায় নি। তবে ১৩৫১
সালে সামন্ত রাজার ভালোবাসার নির্দশন হিসেবে তার স্ত্রী কমলা রাণী বা রাণী বিহরীনির নামে এই বিশাল দিঘিটি খনন করা হয় বলে স্থানীয়রা জানান।

ঐতিহাসিক এই সুতানাল দিঘিতে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে টিকিটের মাধ্যমে মাছ শিকার উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ৮/১০ ফুট গভীরতার ৬০ একর জমির বিশাল এই দিঘির বর্তমানে ১৯ একর ৭৪ শতাংশ পকুরে মাছ চাষ করা হয়। আর
দিঘিরপাড়ের বাসিন্দা ১১৮টি পরিবারের সদস্য নিয়ে গঠন করা হয়েছে সুতানাল দিঘি পরিচালনা কমিটি।

বিশাল বড় এই পুকুরের মাছ খেতে বেশ সুসাদু হওয়ায় মাছ শিকারের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলার সৌখিন মৎস শিকারীরা মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলযোগে ছুটে আসেন এখানে। সামিয়ানা কিংবা তাবু টাঙিয়ে রাতদিন মাছ শিকার করেন তারা। আর
মাছ শিকার দেখতে ছুটে আসেন হাজার হাজার উৎসুক মানুষ। এ সময় বেশি মানুষের আগমনে এখানে গড়ে উঠে অস্থায়ী চা পানের দোকান। হাজার হাজার টাকা বিক্রি হয়ে থাকে এসব দোকানগুলোতে।

গত দুই বছরের চেয়ে এবার অনেক বেশি মৎস শিকারী অংশ গ্রহন করেছেন বলে জানিয়েছেন সমিতির সদস্যরা।

সুতানাল দিঘি পরিচালনা সমিতির সভাপতি আক্তার হোসেন বলেন, এই দিঘিতে দেশীয় প্রজাতির রুই, কাতল, মৃগেল, ব্রিকেট, সিলভার কার্প ও কার্পিও মাছসহ নানা জাতের মাছ সমিতির মাধ্যমে চাষ করা হয়। এখানে ১ কেজি থেকে শুরু করে ১৫/২০ কেজি ওজনের মাছ রয়েছে। টিকিটের মাধ্যমে শুধুমাত্র বর্শি দিয়ে এ মাছ শিকারের উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। মাছ চাষের বিক্রিত লভ্যাংশের টাকা সমিতির সদস্যদের মাঝে সমহারে বন্টন করা হয়। মাছ শিকার উৎসবের সময় দিঘির চারপাশে মাচাং তৈরি করে প্রতি মাচাং এর জন্য ২০ হাজার টাকা করে টিকিট বিক্রি করা হয়। একেকটি মাচাং এ ৮/১০ টি বর্শির সাহায্যে মাছ ধরতে পারেন শিকারীরা। এ বছর গাজীপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলার সৌখিন মৎস শিকারীরা টিকিট ক্রয় করে মাছ শিকার করেছেন।

তিনি আরো জানান, এবার ২০ হাজার টাকা করে ৬৭টি টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। এভাবে
আরো কয়েক ধাপে মাছ শিকারের টিকিট বিক্রি করা হবে।
টাঙ্গাইলের মৎস শিকারী আবদুল আজিজ বলেন, আমরা পাঁচজন মিলে প্রতিবছর এই দিঘির মাছ শিকার করতে আসি। এবারও ২০ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কিনেছি। ইতোমধ্যে মাঝারি আকারের কিছু মাছ শিকার করেছি। টিকিট ক্রয়ের ২০ হাজার টাকার মাছ শিকার করতে পারবেন কি না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন টাকা নয়, মাছ শিকার করা হলো আমাদের নেশা। তাই অনেকটা শখ করেই আমরা
মাছ শিকার করতে আসি।

সংশ্লিষ্ট কাকরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিয়ামুল কাউসার বলেন, দুরদুরান্তের মৎস শিকারীদের অংশ গ্রহনে প্রতি বছর সুলতান দিঘিতে এক মিলন মেলায় পরিনত হয়। এছাড়া জেলাার ঐতিহাসিক স্থান হওয়ায় বছরের প্রায় প্রতিদিনই উৎসুক মানুষ কিংবা পর্যটকরা ছুটে আসেন এই দিঘিটিকে দেখতে। এখানে সুন্দর মনোরম পরিবেশে শিকারীরা মাছ শিকার করেন। তবে তিনি
বলেন, এই দিঘিতে আসার কিছু অংশ ও পুকুরের চারপাশের রাস্তা এখনো কাঁচা রয়েছে। তাই এসব রাস্তা পাকাকরণ করা হলে মৎস শিকারী কিংবা পর্যটকরা এখানে এসে স্বাচ্ছন্দ্যে মাছ শিকার ও ভ্রমন করতে পারতেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট